• ঢাকা
  • শনিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

অচেনা প্রার্থীদের ‘বড় প্রতিদ্বন্দ্বী’ ভাবছেন সাঈদ খোকন

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

এখানে আমার সঙ্গে আরও ছয় প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। আমি কাউকে ছোট করে দেখছি না। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী আমার জন্য চ্যালেঞ্জের। বিএনপি না থাকলেও বাকি যে ছয়জন আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের কাউকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। ফলে, আমি মনে করছি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে…

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে। তিনি ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৬ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। একই আসন থেকে জাতীয় পার্টির কো–চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তিনি ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য। এবারও প্রার্থী হয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন কাজী ফিরোজ রশীদ। ফলে এ আসনের নির্বাচনী মাঠে সাঈদ খোকনের তেমন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তবুও প্রতিদিন ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন তিনি, চাচ্ছেন ভোট। নানা প্রতিশ্রুতিতে ভোটারদের আকৃষ্ট করছেন।

এ আসন থেকে বিপুল ভোটে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ আসন উপহার দেওয়ার মাধ্যমে আরও একবার তার হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা তুলে দিতে চাই। কারণ, নৌকা বিজয়ী হলেই কেবল উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে

জানা যায়, ঢাকা-৬ আসনে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। তবে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী আছেন ছয়জন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাঈদ খোকন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে আছেন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির হামিদুর রেজা খান ভাসানী (আম), তৃণমূল বিএনপির কাজী সিরাজুল ইসলাম (সোনালি আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের আক্তার হোসেন (ছড়ি), গণফ্রন্টের আমিনুল ইসলাম সরকার (মাছ), ইসলামী ঐক্য জোটের রবিউল আলম মজুমদার (মিনার), জাতীয় পার্টি–জেপি’র সৈয়দ নাজমুল হুদাও (বাইসাইকেল) নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়।

শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও দিন-রাত এক করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাঈদ খোকন। নির্বাচনের পরিবেশ, ভোটারদের চাওয়া-পাওয়া, প্রতিশ্রুতি ও প্রাপ্তিসহ নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে ঢাকা পোস্টের মুখোমুখি হন ঢাকা দক্ষিণের সাবেক এ মেয়র। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আবু সালেহ সায়াদাত ও নিজস্ব প্রতিবেদক নাইমুর রহমান নাবিল।

***ঢাকা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জনগণের কাছে যাচ্ছেন। তাদের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য প্রতিশ্রুতি কী কী?

সাঈদ খোকন :
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসন থেকে বিপুল ভোটে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ আসন উপহার দেওয়ার মাধ্যমে আরও একবার তার হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা তুলে দিতে চাই। কারণ, নৌকা বিজয়ী হলেই কেবল উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে। আপনি অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে। আপনিও ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ছিলেন। আপনার দৃষ্টিতে অত্র এলাকায় এখনও কী কী সমস্যা বিদ্যমান, নির্বাচিত হলে কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবেন?

সাঈদ খোকন :
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকাতে। একজন মেয়র বা একজন সংসদ সদস্য হিসেবে নয়, স্থানীয় নাগরিক হিসেবে আমি জানি এ এলাকায় কী কী সমস্যা আছে। নির্বাচিত হলে প্রথমে সেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে চাই। আমার সবচেয়ে বড় শক্তি আমার এলাকার জনগণ। তারা সবসময় আমার পাশে আছেন। তাদের সমস্যাগুলো আগে সমাধান করব।
আমি কাউকে ছোট করে দেখছি না। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী আমার জন্য চ্যালেঞ্জের। বিএনপি না থাকলেও বাকি যে ছয়জন আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের কাউকেই ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ফলে, আমি মনে করছি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে
সাঈদ খোকন

***নির্বাচনে বিএনপি নেই, এটা কীভাবে দেখছেন? আপনার কি মনে হয় এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে?

সাঈদ খোকন :
এখানে আমার সঙ্গে আরও ছয় প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। আমি কাউকে ছোট করে দেখছি না। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত যেকোনো প্রতিদ্বন্দ্বী আমার জন্য চ্যালেঞ্জের। বিএনপি না থাকলেও বাকি যে ছয়জন আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের কাউকেই ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ফলে, আমি মনে করছি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে।

***আসনটি ব্যবসায়িক এলাকা হিসেবেও পরিচিত। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ব্যবসায়ীদের জন্য আপনার বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?

সাঈদ খোকন :
এটা আমাদের ওল্ড সিটি (পুরান শহর), ব্যবসায়িক এলাকাও। এখানকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যদি আমরা সম্প্রসারিত করতে পারি তাহলে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বিষয়টি আমার পরিকল্পনায় আছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা আরও কীভাবে বাড়ানো যায়, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমি সেটাই করব।

***একটি বড় দল ভোটের মাঠে নেই। স্থানীয়রা বলছেন, সহজ প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে আপনি নির্বাচন করছেন। এ অবস্থায় ভোটারদের উপস্থিতি কেমন হতে পারে বলে মনে করেন?

সাঈদ খোকন :
আমি পুরান ঢাকার সন্তান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র থাকা অবস্থায় এবং পরবর্তীতে আমি যেসব কাজ করেছি তাতে বিশ্বাস করি, অত্র এলাকার মানুষ তাদের ভালোবাসার উপহার স্বরূপ আমাকে একটি করে ভোট দেবেন। সেই হিসাবে অন্যান্য আসন থেকে এখানে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি হবে। এ এলাকার ভোটারদের কেউ আটকাতে পারবে না। তাই অন্যান্য এলাকা থেকে এখানে ভোট বেশি পড়বে।
অত্র এলাকার মানুষ তাদের ভালোবাসার উপহার স্বরূপ আমাকে একটি করে ভোট দেবেন। সেই হিসাবে অন্যান্য আসন থেকে এখানে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি হবে। এ এলাকার ভোটারদের কেউ আটকাতে পারবে না। তাই অন্যান্য এলাকা থেকে এখানে ভোট বেশি পড়বে

সাঈদ খোকন:
এখানকার মানুষের সঙ্গে আমার বেড়ে ওঠা। আমার জীবন এ এলাকার মানুষকে কেন্দ্র করেই। আমি যখন মেয়র ছিলাম তখন পরিবর্তনের একটা সূচনা করেছিলাম। বর্তমানে যে কর্তৃপক্ষ রয়েছে, পরিবর্তনের ধারা চলমান রাখা তাদের দায়িত্ব। আমরা তাদের উৎসাহিত করব, সহযোগিতা করব। আশা করি, সিটি কর্পোরেশন আমাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।
এ ছাড়া, দীর্ঘদিন এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো প্রার্থী ছিল না। এ জন্য আমাদের নেতাকর্মীদের মনে কষ্ট ছিল। এখন তারা তাদের প্রার্থী পেয়েছেন। তারাও উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে মাঠে রয়েছেন। আমিও কথা দিচ্ছি, নির্বাচিত হলে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর সুখ-দুঃখে পাশে থাকব, ইনশাল্লাহ।

***নির্বাচনী প্রচারণায় আপনি বারবার বলে আসছেন, বদলে দেবেন পুরান ঢাকাকে। কীভাবে বদলে দিতে চান?

সাঈদ খোকন :
পুরান ঢাকা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। পরিকল্পনা করে পুরান ঢাকাকে নতুনভাবে সাজানোর উদ্যোগ আমি নিতে চাই। এবার জনগণ আমাকে নির্বাচিত করলে পুরান ঢাকাকে নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করব। এটা অনেক বড় উদ্যোগ হবে। টোকিও বা সিঙ্গাপুর সিটি এক সময় পুরান ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ ছিল। সেখানে পরিকল্পনা করে উন্নয়ন করা হয়েছে। আমিও এমন একটা স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছি।
আমি নির্বাচিত হতে পারলে পুরান ঢাকাকে নতুন করে ঢেলে সাজাব। পুনঃউন্নয়নের উদ্যোগ নেব। পুরান ঢাকার সব সমস্যা দূর করে একটা স্মার্ট ঢাকা বিনির্মাণে কাজ করব।
জনগণ আমাকে নির্বাচিত করলে পুরান ঢাকাকে নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করব। এটা অনেক বড় উদ্যোগ হবে। টোকিও বা সিঙ্গাপুর সিটি এক সময় পুরান ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ ছিল। সেখানে পরিকল্পনা করে উন্নয়ন করা হয়েছে। আমিও এমন একটা স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছি
পুরান ঢাকার অনেক মাঠ ও পার্ক পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। অনেক মাঠ দখল হয়ে গিয়েছিল। মেয়র থাকা অবস্থায় আমরা সেই খেলার মাঠ-পার্ক সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৩১টি খেলার মাঠ ও পার্ক নিয়ে আমি ‘জল-সবুজের প্রকল্প’ করেছিলাম। যার মধ্যে ১৮টি মাঠ ও পার্ক আমি উদ্বোধন করে দিয়েছিলাম। বাকিগুলো পরে উদ্বোধন হয়েছে, জনগণ এটি এখন ব্যবহার করতে পারছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এসব বিষয় নিয়েও কাজ করে যাব।

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন